টিকা ও জন সচেতনতায় ছাগলের পিপিআর (ছাগলের প্লেগ) রোগে মৃতের হার শুন্যের কোঠায়
বাংলাদেশ ও সারাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশী ভেটেরিনারিয়ানদের সংগঠন নেটওয়ার্ক ফর দি ভেটেরিনারিয়ানস অফ বাংলাদেশ (বিডিভেটনেট) ও ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ সোসাইটির সহায়তায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)’র ভেটেরিনারি অনুষদের ডিভিএম পড়ুয়া একদল ছাত্র-ছাত্রীদের সামাজিক কর্মকান্ড হিসেবে পরিচালিত প্রতি ছয় মাস অন্তর ছাগলের পিপিআর রোগের টিকা প্রদান কর্মসূচি ও জন সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে একটি চরে পিপিআর ঘটিত ছাগল মৃত্যুর হার শুন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
পিপিআর রোগে আক্রান্ত ছাগলের ৯০% পর্যন্ত মারা যেতে পারে। টিকা প্রদান কর্মসূচী শুরুর আগে যেখানে বছরে ৫০০-৬০০ ছাগল মারা যেত দুই বছর পর সেখানে পিপিআর ঘটিত মরণ নাই বললেই চলে। ময়মনসিংহ সদর থানায় অবস্থিত দক্ষিণ চর কালিবাড়ীতে দুই বছর আগে শুরু হয় টিকা প্রদান কর্মসূচী ও জন সচেতনতা সৃষ্টির কাজ। চর এলাকাটিতে প্রথম বছরে টিকা প্রদান কর্মসূচী শুরুর আগে ছাগল মৃত্যুর হার ছিল প্রায় ৪৫%। এক বছর পর তা নেমে আসে প্রায় ১৫% এ, যা তৃতীয় বছরে শুন্যের কোঠায় নেমে আসলো। প্রথম অবস্থায় ছাগলে টিকা প্রদানে অনেকের মধ্যে আগ্রহের কমতি থাকলেও বর্তমানে গ্রামের ছাগল পালনকারী সবাই টিকা প্রদানের ব্যাপারে ব্যাপকভাবে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। নিজ দায়িত্বে এখন তারা টিকা প্রদান কেন্দ্রে তাদের ছাগল নিয়ে আসছে।
ছাগল মৃত্যুর হার লক্ষনীয় মাত্রায় কমে আসায় প্রান্তিক খামারীদের চোখে-মুখে স্বস্তি ও আত্ববিশ্বাস ফিরে এসেছে। এখন চর এলাকাটিতে প্রচুর পরিমানে ছাগল দেখা যায় যা চোখে পড়ার মত। ইন্টারন্যাশনাল ইয়ুথ সোসাইটির বিএইউ ক্যাম্পাস এম্বাসেডর জনাব প্রাভীন মিশ্র ও তার সহযোগী জনাব মোঃ মুকিত মাহমুদসহ অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে প্রোগ্রামটি সম্পন্ন করছে। মহাখালীস্থ প্রানীসম্পদ গবেষনা প্রতিষ্ঠান (এলআরআই) উৎপাদিত পিপিআর টিকা কার্যকরভাবে ছাগলের পিপিআর রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হিসেবে প্রমানিত হয়েছে- বলেছেন প্রফেসর ড. কেএইচএম নাজমুল হুসাইন নাজির, মাইক্রোবায়োলজি ও হাইজিন বিভাগ, বাকৃবি ও সাধারণ সম্পাদক, বিডিভেটনেট।
২০১৭ সালে এফএও এবং ওআইই ঘোষিত পিপিআর ইরাডিকেশন প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন ও বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরনে এ পিপিআর টিকা প্রদান কর্মসূচী ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন কর্মসূচীতে অংশগ্রহনকারী সাহেদ, সামিন, সেতু, আলমগীর, নিলিমা, মীম, শ্রাবনী, আশরাফ, জুম্মান, রহিমা, আব্দুল হাকিম, আব্দুল্লাহ, রায়হান, বিবেগ, শুভেচ্ছা, রাভি, জেবা, নিঝুম, নাসিম ও সাদাব।
Leave a Reply
Want to join the discussion?Feel free to contribute!